নিম্মোক্ত প্রবন্ধাটিতে সামাজিক ব্যবস্থা সম্বন্ধে মনোনিবেশ করা হয়েছে যা সমাজে সকল নারী পুরুষের মধ্যে সকল ব্যক্তিগত (ঘরে) ও সার্বজনিক (বাহিরে) সম্পর্ক ও একে অপরের সাথে মিথস্ক্রিয়াকে সুগঠিত করে। যদিও এটা বুঝা যায় যে ইসলামে সমাজের জন্য ব্যবস্থা সমূহ প্রতিটি একে অপরের সাথে পারস্পরিকভাবে সম্পর্কিত তাই একটি ব্যবস্থা ছাড়া আরেকটি ব্যবস্থা প্রয়োগের চেষ্টা করাটা শুধুমাত্র দুনিয়াবী জীবনে সর্বনাশা পরিনতির সৃষ্টি করেনা বরং আখিরাতেও দূর্দশার কারন হয় এবং এভাবে প্রয়োগ অনৈসলামিক এবং আল্লাহকে রাগান্বিত করে। উদাহারন স্বরুপ সমাজের ভারসাম্য এবং ইসলামী মূল্যবোধকে নিশ্চত করতেই আল্লাহ সুবহানুওয়া তা’আলা বিচার ব্যবস্থা নির্দিৃষ্ট করে দিয়েছেন এবং তার উপর ভিত্তি করে শাস্তি দিতে বলেছেন। এ কারনেই, নিম্মোক্ত আয়াতের প্রয়োগটি হদ্দের কঠিন শাস্তির সাথে সম্পর্কিত যা সমাজে গভীর প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে সামাজিক ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য। আল্লাহ সুবহানুওয়া তা’আলা বলেছেনঃ
“এবং যারা অভিযুক্ত করে একজন সম্মানী নারীকে কিন্তু তার পক্ষে চারজন স্বাক্ষী আনতে পারে না তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং আবার কখনও তাদের স্বাক্ষ্য গ্রহন করা হবেনা। প্রকৃতপক্ষে তারাই হচ্ছে নাফরমান। কিন্তু যারা এরপর তওবা করে এবং সংশোধিত হয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান”। (আন নুরঃ ৪-৫)
এই আয়াতটি যথেষ্ট প্রমান ছাড়া কোন নারীর চরিত্রে কালিমা লেপন করে অভিযুক্ত করা সম্বন্ধে আলোকপাত করেছে। এটা সমাজে নারী যে সম্মানজনক সত্ত্বা সেই চিন্তাকে সু-প্রতিষ্ঠিত করে। যদিও তথাকথিত প্রগতিশীল স্বাধীনতাকামী এই সমাজে নারিদের সম্মান রক্ষা সম্বন্ধে কোনো ধারনা আমরা দেখিনা। এই সমাজে নারীর সত্ত্বাগত কোনো মূল্য নেই, আছে বানিজ্যিক মূল্য । নারীদের মর্যাদা আজ ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে পশ্চিমা গণমাধ্যমের পর্দায় এবং মা, কন্যা, বোন অথবা স্ত্রী হিসাবে তাদের ভূমিকা আজ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আরেকটি উদাহারনের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাই যে, সমগ্র বিশ্বে আপাত প্রতীয়মান এই যে ইসলামিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা না থাকার কারনে সমাজে মানুষের মৌলিক চাহিদা গুলো পূরণ করা যাচ্ছে না, তাই পুরুষের পক্ষে তার পরিবারের ভরণ পোষণ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাই বর্তমান সমাজের অবস্থা হচ্ছে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে আজ তাদের পরিবারের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য কাজ করতে হচ্ছে। তাই পরিবারে প্রত্যেকের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে একে অপরের সাথে সমঝোতা করে নিতে হচ্ছে।
খিলাফত ধবংস হওয়ার প্রায় এক শতাব্দী পরও আমরা আজও মুসলিম বিশ্বে ইসলামি সমাজ ব্যবস্থার ছোঁয়া দেখতে পাই। কিন্তু অন-ইসলামিক রাষ্ট্র কাঠামোর মাঝে ইসলামের এই সামাজিক মূল্যবোধ গুলো ফিকে হয়ে যাচ্ছে ও তার খাপ খওয়ানো ব্যবস্থা সবাইকে সুবিধা দিতে পারছে না। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো ইসলামের সম্মানের চোখে নারীকে দেখার বিষয়টাকে ধ্বংস করে নারীকে অপব্যবহারের তীব্র চেষ্ঠা চালাচ্ছে। প্রতিটি ঘরে ঘরে তাদের স্যাটেলাইট নামক আগ্রাসী দানবের মাধ্যমে এই প্রচন্ড আক্রমনের জলন্ত স্বাক্ষী আরব বিশ্বের দেশগুলো। এটা হয় আমাদেরকে যৌন হতাশার দিকে ঠেলে দেয় অথবা তথাকথিত স্বাধীনতা চর্চাকে উৎসাহিত করে। কিছু দেশে দুটিই সহবস্থান করে, যেমনঃ তুর্কী, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
নারী পুরুষের সম্পর্কের অব্যবস্থাপনার কারনে সমাজের সামাজিক ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। বর্তমানে যে অপরাধ, অসৎ কাজ সমাজে আমরা দেখতে পাই তার কারন হচ্ছে সেই দূষিত ভিত্তি যার উপর ভিত্তি করে দাড়িয়েছে সামাজিক ব্যবস্থা, আর অন্য সকল ব্যবস্থা। প্রকৃতপক্ষে পুরো ব্যবস্থাই এই দূষিত ভিত্তির উপর দাড়িয়ে আছে। “সামাজিক অপরাধ” এটা আমরা প্রত্যেক সমাজ বইয়ে দেখতে পাই। এই সমস্যা যতই হোকনা কেন এটাকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা হয় এবং কখনও এর কারন হিসেবে ভিত্তিতে যাওয়া হয়না । আমাদের বুঝা উচিত যদি ভিত্তিই খারাপ হয় তাহলে এই ভিত্তি থেকে যা কিছু আসবে সবই খারাপ হবে। এই ধারনাটা সমাজে আমরা দেখিনা। ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন, পর্ণোগ্রাফি, ব্যভিচার, অজাচার, বিচ্ছেদের হার বৃদ্ধি, স্বামী-স্ত্রীর ঝগরা ও নির্যাতন এই সব কিছুই হচ্ছে মৌলিক সমস্যার উপসর্গ মাত্র।
সকল মুসলিমেরই আজ এই প্রশ্ন করা উচিত যে, আমাদের সমাজ কিসের উপর ভিত্তি করে তৈরি হচ্ছে?
মুসলমানদের অবশ্যই এ ক্ষেত্রে তার বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করে এটি বুজতে হবে যে ধর্ম নিরপেক্ষতার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা এই জীবণ ব্যবস্থা ভ্রান্ত এবং খুজেঁ বের করতে হবে ইসলামের সত্যতাকে এবং শুধু মাত্র সেই সমাজ তৈরি করতে হবে যা ইসলামী আকীদার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত এবং যেখানে সামাজিকভাবে ইসলামী শরিয়াহর প্রয়োগ হয় যা আমাদেরকে দুনিয়াতে ও আখিরাতে উভই জায়াগায় সফল্য ও উন্নতি দান করবে।
একজন মুসলিম এর জীবনে উদ্দেশ্য হবে আল্লাহর প্রেরিত সকল আইন অনুসরন করে আল্লাহর ইবাদত করা। অন্যদিকে একজন অমুসলিমের জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে নিজের খেয়াল খুশির ও প্রবৃত্তিকে অনুসরন করে যতটুকু সম্ভব আত্মতুষ্টি অর্জন করা। উদ্দেশ্যের এই ভিন্নতা থেকে আমাদের নির্দেশ করে এই দুজনের কাজ এবং সামাজিক সম্পর্কের ভিত্তি উভয়ই ভিন্ন হবে এবং সেই সাথে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে নারী-পুরুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও ভিন্নতা দেখা দিবে। সামাজিক ব্যবস্থা সমগ্র মানবজাতির উপকারের জন্য এবং মানবজাতির উন্নয়ন ও উৎপাদনকে নিশ্চিত করে আল্লাহ সুবহানুওয়া তা’আলা নারী ও পুরুষের সম্পর্ককে সাজিয়েছেন। এইরুপ কোন ব্যবস্থা ছাড়া আমরা সন্যাসীপনার দিকে ধাবিত হতে পারি এবং নারী পুরুষের সম্পর্কে রক্ষার ক্ষেত্রে দুঃখ দূর্দশা দেখা দিতে পারে। মানুষের মধ্যে আমরা তিন ধরনের সহজাত প্রবৃদ্ধকে দেখতে পাই, এগুলো হল- অসীম কোন কিছুর আরাধনা করার তাড়না, বেচেঁ থাকার তাড়না এবং প্রজননের তাড়না । যদি এই সহজাত প্রবৃত্তি সমুহকে সঠিক ভিত্তি ব্যবহার করে কোন ব্যবস্থার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন ও নির্দেশনা দেয়া না যায় তাহলে এইগুলো আমাদের বিভিন্ন সমস্যার দিকে নিয়ে যাবে যা আমরা বর্তমান সমাজে দেখতে পাচ্ছি। প্রজনন প্রবৃত্তি নিজেই মানুষকে বিভিন্ন সম্পর্কের দিকে নিয়ে যায় এবং যা নির্ভর করে নারী পুরুষের ভুমিকার উপর যেমন- মাতা/পিতা, স্বামী/স্ত্রী, পুত্র/কন্যার ভূমিকা। এখানে এদের সম্পর্ক ইসলামী শরিয়াহ দ্বারা সংঙ্গায়িত হবে।
এটা খুবই কৌতূহলজনক যে, ইসলাম মুসলমানদেরকে তাদের প্রত্যেকের ভূমিকার উপর ভিত্তি করে যে অবস্থার পার্থক্য করে দিয়েছে সেই অবস্থান এখনও সমগ্র মানবজাতি ধরে রেখেছে তবে এই কুফর ব্যবস্থা তাকে স্তব্ধ করে রাখতে চাছে । সন্তান ও পিতা মাতার সম্পর্ক, ভাই ও বোনের সম্পর্ক, স্বামী ও স্ত্রীদের সম্পর্ক সব সম্পর্কই আজ দুটি ভিত্তির উপর দাড়িয়ে আছে,
১। ধর্ম নিরেপেক্ষতার ভ্রান্ত ভিত্তির উপর এবং ২। স্বাধীনতা এবং আত্মকেন্দ্রিকতা নামক ভ্রান্ত ধারনার উপর।
সব সম্পর্কই আজ তৈরি হচ্ছে প্রয়োজন ও প্রবৃত্তির তাড়না এবং ব্যক্তির সীমাবদ্ধ চিন্তার উপর ভিত্তি করে। সমাজের বিভিন্ন মাধ্যম ব্যক্তিকে আহ্বান করছে কিভাবে সে আরেকজনের সাথে আচরণ করবে। যেমন- টেলিভিশন বকতৃতা, সিনেমা, গান, ম্যাগাজিন ইত্যাদির মাধ্যমে বিপরীত লিঙ্গের সাথে কিভাবে আচরন করতে হবে সেই সম্বন্ধে পুঁজিবাদীরা একটি নির্দিষ্ঠ বার্তা দিচ্ছে কারন তারা সমাজে একটি নির্দিষ্ঠ আবহ তৈরি করতে চায়। যেমন Mr Macho অথবা Mr Sensitive আবার একজন নারীর কি ঘরে মনোযোগী হবে নাকি পেশাগত উন্নতির দিকে। এই সকল বার্তা সব সময় সমাজকে একটা সন্দেহজনক অবস্থান এবং অশান্তিতে রাখে। কারন এই বার্তা সব সময় পরিবর্তন হতে থাকে এবং বারবার একটির সাথে আরেকটির সাংঘর্ষ হয়। সরকারেরও হস্তক্ষেপ করতে হয় যখন এইরকম পরিস্থিতি দেখা দেয়। এটা বুঝা যায় যখন কোন একটি পরিস্থিতিতে সরকার পরিকল্পিত প্রচার অভিযান চালায়। যেমন- এইডস্ আতংক। নারীপুরুষের অবাধ মেলামেশার করণে যখন এটা ভীতিকর হয়ে যায় তখন সরকার একজনের সাথে দীর্ঘ সম্পর্কের কথা বলে এবং সরকারের এই নীতি সিনেমা গুলতে দেখা যায় অর্থাৎ অবাধ সম্পর্কের সিনেমার সংখ্যা কমে যায়।
পশ্চিমা সরকারগুলো সন্তান/পিতা-মাতার সম্পর্কের বিষয়েও আজ হস্তক্ষেপ করে দেখিয়ে দেয় কে সন্তানকে পিটাতে পারবে, সম্প্রতি পিতা-মাতাকে এ সুবিধা দিয়ে একটি আইন পাস হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বে বিবাহ বিচ্ছেদের হার তুলনামুকভাবে বাড়ার পর একটি আইন পাস হয় যাতে বিচ্ছেদিত দম্পতিদের মধ্যে কোন পিতা যদি সন্তানের ভরন পোষন না দেয় তবে শিশু সহযোগী সংস্থার তার পিতাকে দৌড়ের উপর রাখবে যদি সে ভরণ পোষণ না দেয়। এই আইন তাদের টক-শো গুলোর একটি প্রধান আলোচনার বিষয়। আবার নারীদের পেশাগত উন্নতি ও পুরুষের সাথে প্রতিযোগিতায় নামানোতে মাতৃত্বের প্রতি নারীদের অনিহার কারনে সরকার আবার অধিক সন্তানধারি মাকে অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়ে শিশু জন্মহার বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এইসব বিকল্প অস্থায়ী ও অনুপযোগী সমাধান আমাদেরকে নির্দেশ করে মানুষ তৈরি এই ব্যবস্থার মধ্যে ভারসাম্যহীনতা এবং অসম্পূর্ণতা বিরাজ করেছে। যা হচ্ছে, মানুষ যে সীমাবদ্ধ জীব তারই প্রতিফলন।
নারী-পুরুষেরভুমিকা:
নারীরা সব সময় সম্মানের পাত্র এবং অবশ্যই মর্যদাপূর্ণ। পুরুষের জন্য বাধ্যতামূলক নারীদেরকে মিথ্যা কলংক বা অপবাদ, শোষণ এবং আক্রমন থেকে রক্ষা করা। একজন নারীর প্রধান ভুমিকাই হচ্ছে স্ত্রী এবং মা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা। তার দায়িত্ব হচ্ছে সন্তানদের দেখাশুনা করা এবং স্বামীর প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া। যদিও, এই দায়িত্ব স্বামীকে সন্তানদের দেখাশুনা করা এবং স্ত্রীদের সামাজিক ভূমিকা ও পেশাগত উন্নয়ণকে অস্বীকার করে না। বরঞ্চ ইসলাম উৎসাহিত করে নারীদেরকে সামাজিক ভূমিকা পালনে। যেমন একজন চিকিৎসক হিসেবে, একজন শিক্ষিকা হিসেবে অথবা একজন বিচারক হিসেবে এবং তাকে অনুমতি দেয় সকল প্রকার পেশাগত কাজ করতে যেমন- ব্যবসা, যতক্ষন পর্যন্ত না তা তার প্রাথমিক কর্তব্য ও দায়িত্বের সাথে সাংঘার্ষিক না হয়। নারীরা পরিবারকে দেখভাল করতে পারবে এবং অর্থায়নও করতে পারবে তবে স্ত্রীদেরকে এবং পরিবারকে খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান দেয়া এটা মূলত ফরজ হচ্ছে স্বামীর এবং পিতাদের উপর কোন নারীর নয়।
রাজনৈতিকজীবনেনারীওপুরুষেরভূমিকাঃ
নারীরা পুরুষের মতই রাষ্ট্রের চলমান কার্যক্রমের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য রাজনীতিতে অংশগ্রহন করতে পারবে। অনুরূপভাবে, বর্তমানে ইসলামী রাষ্ট্রের অনুপস্থিতিতে মুসলমান নারীদের উপর ফরজ দায়িত্ব হল দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা এবং দাওয়াত দেওয়া (অমুসলিমদেরকে ইসলাম গ্রহনের জন্য এবং মুসলিমদেরকে ইসলাম বুঝার জন্য এবং দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের জন্য দাওয়াত দেয়া) এই কারনে আমরা আকাবার বা’আত এ দুইজন মহিলাকে অংশগ্রহন করতে দেখি।
আবার একজন নারী কখনও শাসক হতে অনুমোদন পাবেনা যেমন-খলিফা। অথবা শাসকের পদও দখল করে রাখতে পারবেনা যেমন-প্রদেশ সমূহের ওয়ালী। এটার প্রমান পাই আমরা ইমাম বুখারী কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে আবি বাকরা এর বর্ণনায়, তিনি বললেন “যখন রাসুল (সঃ) উপর খবর পৌছল পারস্যের ব্যপারে যে তারা রাজার (কিসরা) কণ্যাকে তাদের শাসক হিসাবে নির্বাচিত করেছিল, তিঁনি বললেন “যে লোকেরা নারী দ্বারা শাসিত হয় তারা কখনও উন্নতি করতে পারবেনা।”
নারী-পুরুষএকনয়ঃ
এটা দৃষ্টত কিছু লোক বলে এটা ইসলামের লিঙ্গ বৈষম্য আচরণ। এটা শুধুমাত্রই ভ্রান্ত নয় এবং এটা পরিপূর্ণ ভাবেই ভুল এবং মূর্খতার একটি চিহ্ন। এটা মুসলমানদের উপরে পশ্চিমা আক্রমণকে আরও স্পষ্ট করে। সমতার পুরো ধারনাটিই একটি ভুল ধারনা যেহেতু প্রকৃতিগতভাবেই নারী-পুরুষ উভয়ই ভিন্ন। ইসলামে একজনকে আরেকজন থেকে অধ:স্তন হিসেবে দেখা হয় না। অন্যদিকে যেটা বিদ্যমান খিষ্ট্রধর্মের মধ্যে। এটাও নয় যে পশ্চিমাদের মত নারীদেরকে অর্থনৈতিক পন্য হিসেবে দেখা হবে। ইসলামের মধ্যে নারী এবং পুরুষের উভয়েরই দায়িত্ব ও ভুমিকা কিছু ক্ষেত্রে একই এবং অন্য কিছু ক্ষেত্রে দায়িত্ব ও ভূমিকা আবার ভিন্ন, যেমন- পুরুষদের উপর ফরয জিহাদ করা এবং পরিবারকে অর্থায়ন করা কিন্তু এটা নারীদের উপর ফরয নয়।
তাই কেউ যদি ইসলামে সমতার ধারনাকে আনতে চায় তাহলে এই সমতা আসবে পুরষ্কার এবং শাস্তির বিষয়ে। যেমন- যদি নারী ও পুরুষ উভয়ই কোন ফরয দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে অথবা কোন হারাম কাজ করে তারা অবশ্যই শাস্তি প্রাপ্ত হবে আল্লাহ তা’আলার কাছ থেকে অথবা ইসলামী রাষ্ট্র থেকে।
“প্রত্যেকেই যারা অণু পরিমান সৎ কাজ অথবা অসৎ কাজ করবে তারা তা দেখতে পাবে” (সূরা আল-জিল জিলা আয়াত ৭-৮)
নারী-পুরুষ এক সাথে জড়োহবারআইন (জনজীবনেএবংব্যক্তিগতজীবনে)(Public Place and Privet Place):
পশ্চিমা বিশ্বে প্রতিদিনই অশালীনতার ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে আর ইসলাম সমাজে বৈধ বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে নারী ও পুরুষের শালীনতাকে নিশ্চিত করে। তাই ইসলামী রাষ্ট্রের মধ্যে অথবা বর্তমানে ইসলামী রাষ্ট্র ছাড়া অবস্থায় নারী এবং পুরুষ যদি না তারা মাহরাম (বিবাহ্যোগ্য নয় একজন আরেকজনকে) হয় তবে একসাথে জড়ো হতে পারবেনা জনজীবনে ও ব্যক্তিগত জীবনে।
তবে শরিয়াহ (ইসলামিক আইন) জড়ো হবার অনুমোদন দেয় যেমন- শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র, ক্রয়-বিক্রয় এবং হজ্ব ইত্যাদি জনবহুল জায়গায়। যদিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জমায়েত হওয়া অনুমোদন করে কোন সুনির্দিষ্ঠ শিক্ষা এবং কোন বিষয় সম্বন্ধে জানার জন্য। বিনোদনের জন্য একত্রিত হওয়া (বিদ্যালয়,কলেজে,বিশ্ববিদ্যালয়ে) সম্পূর্ণ নিষেধ। অনুরুপভাবে কর্মক্ষেত্রে এবং বাজারেও। ইসলাম জনজীবন ও ব্যক্তিগত জীবন উভয়কেই সংজ্ঞায়িত ও নিয়ন্ত্রন করে। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ফরয নিজের দৃষ্ঠিকে সংযত রাখা।
“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ্ তা অবহিত আছেন”। (সূরা আন-নূর আয়াত-৩০-৩১)
জনজীবনে (Public Place) ও ব্যক্তিগত জীবনে (Privet Place) উভয় জায়গায় একজন পুরুষ এবং নারীর জন্য এটা হারাম যে একাকী একটি কক্ষে বসবে সাথে কাউকে নিয়ে যে তাদের মাহরাম নয়।
মুহাম্মদ (সঃ) বলেন, “একজন মহিলার উচিত না একজন পুরুষের সাথে দেখা এবং মেলামেশা করা যদি তার সাথে কোন মাহরাম না থাকে” । এটা পুরুষদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
এই দৃষ্ঠি ভঙ্গি পুরো সমাজের চেহারা পাল্টে দেবে যেমন-ইসলামী রাষ্ট্রের গণপরিবহনে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে তেমনি শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রেও নারী ও পুরুষকে আলাদা করা হবে।
মহিলাদেরপোশাকপরিধানেরআইনঃ
শরিয়াহ অনুযায়ী নারী পুরুষ উভয়েরই শরীরের নির্দিষ্ঠ অংশ ঢেকে রাখা ফরয যাকে বলে আল-আওরাহ। খোলামেলা ভাবে আকর্ষণ করানোর পশ্চিমা ধারনা সম্পূর্ণ এর বিপরীত এবং যা মানুষকে যৌন হতাশার দিকে ঠেলে দেয়।
ব্যক্তিগত জীবনে একজন নারী তার স্বামীর সামনে তার আওরাহ ঢেকে না রাখলেও হবে। যেমন- বুক থেকে হাটু পর্যন্ত ঢেকে রাখলে হবে। অতটুকু পর্যন্ত ঢেকে রাখা মহিলার মাহরাম এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আল্লাহর নির্দেশ মানার জন্য জনজীবনে (Public Place) একজন নারীর উপর ফরয তার আওরাহ কে পরিপূর্ণভাবে ঢেকে ফেলা যেমন-(তার পুরো শরীর, ঘাড়, গলা এবং চুল), তবে মুখ এবং হাত ব্যতীত।
“হে নবী। আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কণ্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবেনা”। (৩৩: ৫৯)
জনজীবনের পোশাকটি মাথা ও গলা সমন্নিত একটি রুমাল দ্বারা আবৃত (খিমার) থাকবে এবং একটি অতিরিক্ত কাপড় (জিলবাব) যেটা সে ঘরে পরিহিত কাপড়ের উপর পড়বে। জিলবাব অবশ্যই ঢিলেঢালা হতে হবে, পাতলা হতে পারবেনা যার ভিতরে সব দেখা যায় এবং অতি উজ্জল/চোখ ধাঁধানো (তাবারুজ) হতে পারবেনা।
মহিলাদের সৌন্দর্য্য প্রকাশের ক্ষেত্রে চোখ ধাঁধানো এবং পুরুষদের মনোযোগ আকর্ষণ করে এমন কোন কিছূ, সুগন্ধিযুক্ত এমন যার সুগন্ধ আরেকজন অনুভব করতে পারে এমন কোন কিছু জনজীবনে (Public Place) ব্যবহার করা হারাম। রাসূল (সঃ) বলেন “ কোন মহিলা যে এমন সুগন্ধি ব্যবহার করল এবং কোন পুরুষ তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সে সুগন্ধি পেল, তাহলে সে মহিলা জেনাহ কারির সমতুল্য হবে”।
বিবাহঃ
মানব জাতির মধ্যে ভালবাসা এবং প্রজননের আকাংখা প্রবৃত্তিগতভাবে বিদ্যমান। অ-সাদৃশ্য বিপদগামী ভ্রান্তচিন্তার পশ্চিমারা কোন নিয়ম বা বাধা রাখেনি এই সহজাত প্রবৃত্তিকে ব্যবহার করার জন্য। ইসলাম মানব জাতিকে একটি ব্যবস্থা দিয়েছে এই সহজাত প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ ও প্রকাশ করার জন্য যেমন-বিবাহ। আল্লাহ সুবহানুওয়া তা’আলা পবিত্র কোরানে বলেন
“আর এক নিদর্শণ এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংঙ্গীনিকে সৃষ্ঠি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারষ্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্ঠি করেছেন। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শণ রয়েছে। (৩০:২১)
“তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ্ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ”। (আন নুরঃ ৩২)
ইসলামে কৌমার্য বা চির কুমার বলে কিছু নেই এবং মহিলাদের বিয়ের জন্য জোর করা যাবে বলে বর্তমান সংস্কৃতিতে ও পশ্চিমারা ইসলামের ব্যপারে যে মিথ্যা অপপ্রচারের ছবি আমাদের সামনে অংকন করেছে তা ইসলামের সম্পূর্ণ বিপরীত। কোন নারীর ইচ্ছা বা সম্মতি ব্যতিত কোন বিবাহ ইসলামে বৈধ নয়।
পবিত্র কোরানে বলেছেন যে পুরুষরা নারীদের আদেশ করবে, এইটা তাদেরকে রক্ষা ও আশ্রয়ের বিষয়ে বুঝানো হয়েছে। তাকে শোষণ করার জন্য বুঝানো হয়নি অথবা প্রভু-ভৃত্তের সম্পর্কের মতো বুঝানো হয়নি। বরং স্বামীকে মান্য করা মানে স্বামী যতক্ষণ আল্লাহর আইন মান্য করে আদেশ করবে তা মান্য করার কথা বলা হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে মূলসত্য এই যে তাদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক থাকতে হবে। রাসূল (সঃ)বলেন “তোমাদের মধ্যে উত্তম সে, যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম”।
সে কারনে স্বামীর ভূমিকাও হবে স্ত্রীর প্রতি সন্তোসজনক, তাকে বোঝা, যত্ন করা এবং সম্মান দেয়া। তাই যদি স্বামী স্ত্রীকে এমন কোন কিছূ করার নির্দেশ দেয় যা আল্লাহ এবং শরিয়াহ আইনের বিরুদ্ধে (যা তার উপর ফরয) তখন তার অবশ্যই স্বামীকে অমান্য করতে হবে।
অন্য সভ্যতায় যেখানে কিছু দূষিত চর্চার কারনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক অবনতির দিকে যাচ্ছে সেখানে ইসলামে স্ত্রীকে স্বামী মোহরানা দিচ্ছে এবং ঘরের কাজে স্ত্রীকে সাহায্য করতে হলে স্বামী সেই সাহায্য করতে বাধ্য করেছে, যদি না পারে তাহলে গৃহ পরিচারিকা রেখে সাহায্য করার ব্যবস্থা করতে হবে।
ভালবাসানিয়ে ইসলামিকওপশ্চিমাদৃষ্টিভঙ্গিঃ
বর্তমান ভ্রান্ত সমাজ ব্যবস্থায় নারী-পুরুষের সম্পর্ক পরিস্কার ভাবে গড়ে উঠেছে মানুষের শারীরিক চাহিদা এবং আবেগের তাড়নার ভিত্তিতে । ভালবাসা একটা জনপ্রিয় শব্দে পরিণত হয়েছে সকল ভাষাগুলোতে, সকল সম্পর্ক গুলো গড়ে উঠে এটার উপর ভিত্তে করে, কিন্তু কারো কাছে পরিস্কার কোর ধারনা নেই যে এটা কোন মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে। এই অসংজ্ঞায়িত আবেগের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা সম্পর্কের ফলাফল আজকে আমাদের কাছে পরিস্কার হয় যখন আমরা দেখি সমাজে বিবাহের বিচ্ছেদের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মানুষ বিবাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। স্বামী এবং স্ত্রীর সম্পর্ক কেমন হবে এবং পরস্পরের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা কি হবে এই সব কিছুই মানুষের মনগড়া নিয়মে চলছে যা তাদেরকে চরম দুঃখ দূর্দশার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ইসলাম স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে এবং স্বামী-স্ত্রী প্রত্যেকের সাথে সম্পর্ক কেমন হবে তার একটি পরিস্কার রুপরেখা দিয়েছে। ইসলাম সকল প্রকার সন্দেহকে দূরে রেখে এবং স্বামী-স্ত্রী উভয়কে সঙ্গত রেখে কাজ করার অনুমতি দেয়, তাদের মধ্যে ভালবাসার বৃদ্ধির জন্য একটি মূলকাঠামো দেয়, যেখানে এই সব কিছুই পশ্চিমারা অসাদৃশ্যভাবে দেয়।
আল্লাহ সুবহানহু তা’আলা পবিত্র কুরআনে এটাও বলেছেন “ স্ত্রীর প্রতি স্বামীর যে অধিকার আছে স্ত্রীরও স্বামীর প্রতি একই অধিকার রয়েছে নিয়ম অনুযায়ী।” (আল-কুরআন ২:২২৪)
পবিত্র কুরআনে বিশেষ করে সূরা আন-নিসা এবং সূরা নূর এ, রাসূল (সঃ) এর প্রচুর হাদীসে এবং এ সব হতে অনুসৃত ফকীহদের গ্রন্থ সমূহে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা আছে যা সমাজের মৌলিক নীতি হওয়া উচিত এবং পরবর্তী প্রজন্মের উচিত এখান থেকে শুরু করা।
মাতা-পিতার প্রতি দায়িত্বঃ
বাবা-মার ভূমিকা বর্তমান সমাজে প্রতিনিয়ত অবনতির দিকে যাচ্ছে। সন্তানরা বলতে শুরু করেছে তারা স্বতন্ত্র এবং তাদেরও অধিকার আছে নিজের ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করার, আর সন্তানদের শিষ্ঠাচার শেখানোর জন্য বাবা-মা খুবই ছোট ভূমিকা রাখে। স্বাধীনতার নামে সন্তানরা অহংকারী ও অস্থির হয়ে যাচ্ছে, নিজের আচার ব্যবহারকে নিজেই নিয়ন্ত্রন করতে পারছে না। সাম্প্রতিক সংবাদ পত্রের সংবাদ দেখলেই আমরা বুঝতে পারি শুধু মাত্র অর্থের জন্য সন্তানরা তাদের পিতা মাতাকে মেরে ফেলছে।
আবার সন্তান বড় হয়ে মাতা-পিতার ভরণ-পোষণ দিচ্ছেনা বরং বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিচ্ছে অথবা খবরও নিচ্ছেনা পিতা মাতা কোথায় আছে কেমন আছে।
ইসলামে বাবা-মা এর প্রতি সন্তানদের আচরণ শরীয়াহ এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন- নিম্মোক্ত হাদীসগুলো দেখলে আমরা বুঝতে পারবো বাবা-মায়ের প্রতি আচরণ কেমন হওয়া উচিত।
আবু বাকরা কর্তৃক বণিত রাসূল (সঃ) বলেন “আল্লাহ চাইলে সব গুনাহ (মানুষের গুনাহ) ক্ষমা করে দিতে পারেন শুধু মাত্র পিতা মাতাকে অমান্য করার গুনাহ ছাড়া।”
মৃত্যু আগ পর্যন্ত কেউ যদি এই গুনাহ করে আল্লাহ সুবহানহু তা’আলা ভাবে তার কাছ থেকে প্রতিশোধ নেবেন।
আল-মুগীরা থেকে বর্নিত রাসূল (সা.) বলেন “খুব শীঘ্রই আল্লাহ তোমাদেরকে শাস্তি দেবেন মাতাকে অমান্য করার জন্য”।
আবদুল্লাহ ইবনে আমর থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেন “আল্লাহর সন্তুষ্ঠি নির্ভর করে পিতার সন্তুষ্ঠির উপর এবং আল্লাহর অসন্তোষ্টি নির্ভর করে পিতার অসন্তুোষ্টির উপরে” (তিরমিজি)
উপসংহার:
আরও অনেক আইন আছে ইসলামি সমাজ ব্যবস্থাকে ঘিরে, যা এখানে আলোচনা করা হয়নি, এখানে শুধুমাত্র তুলনামূলক আলোচনা করা হয়েছে। ইসলামের সমাজ ব্যবস্থার আলোচনা অনেক বৃহৎ কারন নারী-পুরুষের সম্পর্ক ও এর ফলাফল থেকে উঠে আসা প্রতিটি বিষয়েও ইসলামের নির্দেশ রয়েছে।
ভ্রান্ত এবং নষ্ট চিন্তার চর্চা যা পশ্চিমাদের মধ্যে এবং বর্তমানে আমাদের সভ্যতা ও ঐত্যেহ্যের মধ্যে বিদ্যমান তা থেকে বাঁচার জন্য মুসলিম উম্মাহর একান্ত প্রয়োজন ইসলামিক সভ্যতাকে অধ্যায়ন করা ও আকরে ধরা।
পশ্চিমারা যে ব্যধির দিকে আমাদেকে ডাকছে তা থেকে আমাদের নিজেদের কে গুরুত্বের সাথে বের হয়ে আসতে হবে, এবং তাদের সাথে প্রতিদন্দিতা করতে হবে ইসলাম কে একমাএ বিকল্প হিসেবে আহবান করার মাধ্যমে,তাই আমাদের একটা প্রজন্ম তৈরি করতে হবে যারা পুন:জাগরিত হওয়ার আকাংখা রাখে এবং খিলাফাতকে চালিয়ে নিয়ে যাবে।
অতএব, পশ্চিমাদের দেয়া ব্যধিগ্রস্থ ব্যবস্তা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে আর তা না হলে র্বতমান প্রজন্মই ক্ষতিগ্রস্ত হবে । আমাদের ভাবতে হবে কোন ধরনের ভবিষৎ তাদের জন্য অপেক্ষা করছে এই বিকৃত ও অপরাধে ঘেরা সমাজে ???
যদিও আমাদের সংগ্রামের ক্ষেএ বহু তবে এই কাজ গুলো সমাধান করার পদ্ধতি কেবলমাএ একটি-ই যা কুরআন এবং সুন্নাহর বাস্তবায়ন অর্থাৎ খিলাফত। উম্মাহর খিলাফতের জন্য সংগ্রাম করা প্রয়োজন আল্লাহ সুবহনাহু ওয়া তায়ালা থেকে বিজয় নেওয়ার জন্য এবং ইসলামিক ব্যবস্তকে দেখা জন্য । আল-খিলাফাহ শুধু মাত্র সামাজিক ব্যবস্থাই প্রতষ্ঠিত করবেনা অন্য সব ব্যবস্থাকেও প্রতিষ্ঠিত করবে যা মুসলিম উম্মাহকে বাধ্য করবে ইসলামিক অইন গ্রহণ করতে, ইসলামিক বিধি-বিধান রক্ষা করতে এবং তা প্রচার করার জন্য।
আল্লাহ্ তালা বলেন,
আল্লাহর নির্দেশে তারা ওদের হেফাযত করে নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আল্লাহ্ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্য়ন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। (সুরা আর রাদঃ ১১)
আল্লাহ্ উম্মাহকে ইসলাম দিয়ে সম্মানিত করুক এবং দুনিয়াতে উম্মাহকে দৃঢ় পদে প্রতিষ্টিত করুক এবং দুনিয়া ও আখিরাতে এই দ্বীন প্রতিষ্টার মাধ্যমে সফলতা দান করুক। আমীন।